অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ সংক্রান্ত গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে শনিবার (২৫ মে) রাতে তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল। ইতোমধ্যে দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় আজ সন্ধ্যায় পৃথক সময়ে এই বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিএনপির প্রতিনিধিদল এবং সাড়ে ৮টায় জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। বিএনপির পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। জামায়াতের প্রতিনিধি দলে থাকবেন দলের আমির শফিকুর রহমান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সন্ধ্যায় সাক্ষাতের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।”
একইভাবে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে সরাসরি আলোচনার জন্য তাঁরা সময় চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। এর জবাবে আজ সন্ধ্যায় বৈঠকের সময় নির্ধারিত হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ কয়েকটি দলের নেতারা অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেন। সেখানে একটি ঐকমত্য গঠিত হয় যে, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগ না করার আহ্বান জানাবেন এবং বর্তমান সংকট উত্তরণে তাঁর নেতৃত্বকে সমর্থন জানাবেন।
বিএনপি ইতোমধ্যে অবিলম্বে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার দলের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “২০২৫ সালের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, “সাম্প্রতিক কার্যক্রমে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। কিছু উপদেষ্টার ভূমিকা নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”
অপরদিকে, আজ বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) নিয়মিত সভা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এই সভার পর কোনো আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং হবে না বলে আগেই জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা হলে বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। পরদিন শুক্রবার তিনি সারাদিন যমুনায় অবস্থান করেন এবং কোনো মন্তব্য করেননি।
আজকের রাজনৈতিক বৈঠকগুলোতে দেশের আগামী রাজনৈতিক পথনকশা ও সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।