ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে সামুরাই ছুরি, চাপাতিসহ প্রায় ১১০০টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে যে অস্ত্রগুলো উদ্ধার হয়েছে, তার বেশিরভাগই দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।
গতকাল শনিবার (৯ আগস্ট) সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ আর্মি ক্যাম্প সূত্রে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ায় এসব অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগেও গ্রেপ্তার হওয়া সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে সামুরাই ছুরিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল, যা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হয়।
চলতি মাসে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, রাজধানীর একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে এসব অস্ত্র ভাড়া ও বিক্রির মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের হাতে পৌঁছানো হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত কয়েকজন সন্ত্রাসী জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য নিশ্চিত করে। এরপর টানা দুই দিন নিউ মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দোকান ও গুদাম থেকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়, যেগুলোর কোনো গৃহস্থালি ব্যবহার নেই। গত কয়েক মাসে এই অস্ত্র ব্যবহার করে একাধিক হত্যা, আহত, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো যাচাই-বাছাই শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অপরাধীদের কোনো যোগসাজশ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।
সেনাবাহিনী ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের ধারালো অস্ত্র বিক্রি থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এসব অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পড়ে সাধারণ মানুষের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে।
এছাড়া সাধারণ জনগণকে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য রোধে সহযোগিতা করতে এবং আশপাশে কোনো অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা বা মজুত দেখলে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সেনাবাহিনী স্পষ্ট করেছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং দুষ্কৃতিকারীরা যাতে কোনোভাবেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য তারা দিনরাত কাজ করছে।