বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম রেং ত্লাং পাহাড়ি এলাকায় সেনাবাহিনীর মাসব্যাপী বিশেষ অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) বা বম পার্টির একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযানে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে সেনা সদস্যরা। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এক মাসের বিশেষ অভিযান
আইএসপিআর জানায়, গত ২৫ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত টানা এক মাস সেনাবাহিনী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। সীমান্তবর্তী জনবসতিহীন এলাকায় সেনারা কেএনএ’র একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি চিহ্নিত করে তল্লাশি চালায়।
অভিযানে কাঠের রাইফেল, স্নাইপার অস্ত্রের সিলিং, মিলিটারি বেল্ট, কার্তুজ বেল্ট, পোচ, ইউনিফর্ম, বুট, কম্বল, ওয়াকিটকি চার্জার, সোলার প্যানেল, রসদ এবং বিভিন্ন সামরিক প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ঘাঁটির ভেতরে নির্মিত প্রশিক্ষণ মাঠ, ফায়ারিং রেঞ্জ, পরিখা ও কৌশলগত স্থাপনাগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর অঙ্গীকার
আইএসপিআর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে সব জাতিগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী বদ্ধপরিকর। ভবিষ্যতেও সশস্ত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আগের অভিযান
এর আগে, গত ৩ জুলাই রুমার পাইন্দু ইউনিয়নের পলিপাংসা-মোয়ালপিয়র তাইনদাংঝিরি এলাকায় সেনা অভিযানে কেএনএ কমান্ডার লাল মিন সাং ওরফে “পুতিন” নিহত হন। সে সময় আরও তিনজন আহত হয় এবং সেনারা ৩টি এসএমজি, ১টি রাইফেলসহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনা
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২ এপ্রিল রুমায় এবং ৩ এপ্রিল থানচিতে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রুমায় সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভাঙতে না পেরে সশস্ত্ররা ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে এবং পাহারায় থাকা পুলিশ ও আনসারের ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থাপক উদ্ধার হলেও লুট হওয়া অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এই ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িত। সেই অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।