লালদিয়া ও পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া দুই বিদেশি কোম্পানি আগামী ১০ বছর আয়করে ১০০ শতাংশ করমুক্ত সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তবে তিনি বলেন, এটি কোনো নতুন কর প্রণোদনা নয়, সরকারের আগের আদেশ অনুযায়ীই এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন,
“পরশু আমরা লালদিয়া ও পানগাঁও টার্মিনালের দুটি চুক্তি সই করেছি। এই চুক্তির অংশ হিসেবে কোম্পানিগুলোকে ১০ বছরের জন্য ১০০ শতাংশ করমুক্ত সুযোগ দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেখানে কর্মরত বিদেশি টেকনিক্যাল স্টাফদের আয়ের ওপরও করছাড় থাকবে। পাশাপাশি রয়্যালটি, টেকনিক্যাল নলেজ ফি, লভ্যাংশ সবই করমুক্ত থাকবে।”
তিনি বলেন, দেশের বিদ্যমান কর কাঠামোয় যেখানে কর আদায়ের পরিধি বাড়ানোর প্রয়োজন, সেখানে নির্বিচারে করমুক্ত সুবিধা দেওয়া হলে প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহে বড় ধরনের চাপ তৈরি হবে। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন,
“যাদের কর দেওয়ার কথা, তাদের এভাবে করছাড় দিলে আমরা কর আদায় করব কীভাবে?”
২০১৭ সালের বিদ্যমান সরকারি আদেশ (এসআরও) অনুযায়ী, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে ১২ ধরনের অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ১০ বছরের জন্য ১০০ শতাংশ করমুক্ত সুবিধা পায়। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- জাতীয় মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে, নদী সেতু, টানেল, রিভার পোর্ট, সি পোর্ট, বিমানবন্দর, মনোরেল, সাবওয়ে, রেললাইন, বাস টার্মিনাল, বাস ডিপো এবং বৃদ্ধাশ্রম। আরেক আদেশে বলা আছে, এসব প্রকল্পে বিদেশি টেকনিশিয়ানরা প্রথম তিন বছর আয়ের ওপর ৫০ শতাংশ করমুক্ত সুবিধা পান।
১৭ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রামের লালদিয়া এবং ঢাকার কাছে পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরের কাছে হস্তান্তরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। দেশের ইতিহাসে এটি প্রথমবারের মতো কোনো বড় বন্দর-অবকাঠামো দীর্ঘমেয়াদে বিদেশি কোম্পানির কাছে লিজ দেওয়া হলো।
চুক্তি অনুযায়ী, ডেনমার্কভিত্তিক মায়েরস্ক গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক এপিএম টার্মিনালস বিএভি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ৩০ বছরের কনসেশন চুক্তি করেছে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য, যা দেশের অন্যতম বৃহৎ পিপিপি প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।