সফলভাবে শেষ হলো সরকার ঘোষিত ৫৮ দিনের ‘মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রম-২০২৫’। গত ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১১ জুন পর্যন্ত চলা এই কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ছিল বঙ্গোপসাগরে ইলিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রজাতির মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ সরকারের এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় নৌবাহিনীর ৪টি যুদ্ধজাহাজ, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক টহল বোট এবং অত্যাধুনিক মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফটের মাধ্যমে টানা নজরদারি চালিয়ে অবৈধ মাছ শিকার কার্যক্রম রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এই ৫৮ দিনে নৌবাহিনী মোট ২৭৫টি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ১১০ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল, ২ হাজার ৭৪৪টি বিভিন্ন ধরনের জাল, ৫০৫ জন জেলে, ৫৭টি মাছ ধরার নৌকা এবং ১৬ হাজার ৩২৮ কেজি মাছ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
নৌবাহিনী জানায়, জব্দকৃত অবৈধ জাল স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয় এবং মাছগুলো স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। আটক জেলে ও নৌকাগুলো আইনানুগ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অভিযান চলাকালে স্থানীয় জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে নৌবাহিনী সক্রিয় ভূমিকা রাখে। প্রজনন মৌসুমে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনার বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নৌবাহিনীর এই সফল অভিযানের ফলে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আরও সমৃদ্ধ হবে এবং দেশের মৎস্যখাতের টেকসই উন্নয়নের পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।