সোশ্যাল মিডিয়ায় জেন জি আন্দোলনঃ হতে পারে ধ্বংসাত্মক পরিণতি

মরক্কো থেকে মাদাগাস্কার, প্যারাগুয়ে থেকে পেরু বিশ্বজুড়ে এক অদ্ভুত সুরে ছড়িয়ে পড়ছে তরুণদের বিক্ষোভ। ১৩ থেকে ২৮ বছর বয়সী জেনারেশন জেড বা জেন-জি প্রজন্ম সরকারের প্রতি হতাশা প্রকাশ করছে, দাবি জানাচ্ছে পরিবর্তনের। বিদ্যুৎ পানির ঘাটতি, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য সবকিছুর বিরুদ্ধেই তারা রাস্তায় নেমেছে।

এই তরুণদের আন্দোলনের একটাই মিল সবকিছুই শুরু ও বিস্তার পাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াকে ঘিরে। ফেসবুক, টিকটক বা এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো হয়ে উঠেছে তাদের গল্প বলার, সংহতি গড়ে তোলার, কৌশল নির্ধারণের এবং সীমান্ত পেরিয়ে তথ্য আদান প্রদানের কেন্দ্র।

মাদাগাস্কারে বিদ্যুৎ পানির সংকটে ক্ষুব্ধ জনতা সরকারের পতন ঘটিয়েছে। নেপালে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে বাধ্য করেছে। কেনিয়ার তরুণেরা সরকারের জবাবদিহিতা দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও রাস্তায় একযোগে প্রতিবাদ করেছে। পেরুতে নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণরা পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় কল্যাণ তহবিল কাটছাঁটের প্রতিবাদে অস্থায়ী কর্মীরা বিক্ষোভ করেছে। আর মরক্কোয় উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা ব্যবস্থার দাবিতে তরুণেরা সরকারের বিলাসী ব্যয়ের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

জার্মান ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিজের গবেষক জানজিরা সোম্বাতপুনসিরির মতে, ডিজিটাল সংযোগের যুগে তরুণ–নেতৃত্বাধীন এই বিক্ষোভগুলো গত ১৫ বছরের ধারাবাহিকতার অংশ। এরই ধারাবাহিকতায় আছে আরব বসন্ত (২০১০–১১), অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট (২০১১), স্পেনের ইন্ডিগনাডোস আন্দোলন (২০১১–১২), থাইল্যান্ড (২০২০–২১), শ্রীলঙ্কা (২০২২) এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভ (২০২৪)।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রজন্মের আন্দোলন তাদের শক্তি যেমন, তেমনি অসতর্ক হলে তা ধ্বংসাত্মক পরিণতিও ডেকে আনতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *