আওয়ামী লীগের লকডাউনঃ চট্টগ্রামে কনস্টেবলের হাতেও এসএমজি

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) নগরজুড়ে কড়া সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। মোড়ে মোড়ে তল্লাশি ও টহল জোরদার করা হয়েছে, এমনকি সাধারণ পথচারীকেও জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে কনস্টেবলদের হাতেও সাবমেশিনগান (এসএমজি) দেখা যায়, যা সাধারণত নায়েক বা এএসআই (সশস্ত্র) সদস্যরা বহন করে থাকেন।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে এক বেতার বার্তায় সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ টহল ও থানা পুলিশকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেখামাত্র এসএমজি দিয়ে ব্রাশফায়ারের নির্দেশ দেন। কমিশনারের এ বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ জানায় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। তাদের মতে, এ ধরনের নির্দেশ বিচারবহির্ভূত হত্যাকে উৎসাহিত করে এবং সংবিধান, আইনের শাসন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের পরিপন্থি।

আসকের বিবৃতিতে বলা হয়-সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ নাগরিকের জীবন ও আইনি আশ্রয়ের নিশ্চয়তা দেয়। সন্দেহভাজন অপরাধীকেও আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া গুলি করার নির্দেশ গ্রহণযোগ্য নয়। তারা আরও বলে, বিচারবহির্ভূত শক্তি প্রয়োগ রাষ্ট্রের নীতি, আইন ও মানবাধিকার কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ; তাই সরকারকে অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সদস্যদের সঠিক বার্তা দিতে হবে।

আসকের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়-রাষ্ট্রের প্রথম দায়িত্ব নাগরিকের জীবন ও মর্যাদা রক্ষা করা। সিএমপি কমিশনারের এ ধরনের মন্তব্য দায়িত্বশীল প্রশাসনিক আচরণের পরিপন্থি এবং ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের মৌলিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বক্তব্যটি প্রত্যাহার না হলে ভবিষ্যতে প্রাণহানি ও বিচারবহির্ভূত ঘটনার ঝুঁকি বাড়তে পারে, যা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের জন্য অগ্রহণযোগ্য।

এ বিষয়ে সিএমপি’র সহকারী কমিশনার (জনসংযোগ) আমিনুর রশিদ বলেন, পুলিশ সদস্যরা অনুমোদিত অস্ত্রই বহন করছেন যেমন এসএমজি, পিস্তল, শটগান, কাটা রাইফেল ও চায়না রাইফেল। গণহারে অটোমেটিক সাবমেশিনগান ব্যবহারের কোনো প্রমাণ নেই। তবে পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,

“এসএমজি সাধারণত নায়েক ও এএসআই পর্যায়ের সদস্যরাই বহন করেন, কনস্টেবলরা সাধারণত চায়না রাইফেল ব্যবহার করে”।

মঙ্গলবার রাতেই নির্দেশনার ব্যাখ্যা দিয়ে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন,

“দেখামাত্র ব্রাশফায়ারের নির্দেশ নিরস্ত্র জনসাধারণের জন্য নয়। যার হাতে অস্ত্র নেই, তার ওপর এসএমজি ব্যবহারের প্রশ্নই ওঠে না। সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারী অপরাধীদের জন্যই এ নির্দেশনা।”

সূত্রঃ সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *