শ্রীলংকাসহ এশিয়ার চার দেশে বন্যার্তদের সহায়তায় সেনাবাহিনী, মৃতের হাজার ছাড়ালো

শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সোমবার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়ার চারটি দেশে এই বন্যায় প্রায় ১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, দক্ষিণ থাইল্যান্ড ও উত্তর মালয়েশিয়ায় প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে পৃথক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো সোমবার উত্তর সুমাত্রায় গিয়ে জানিয়েছেন, সরকার এখনই প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাঠানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, “ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমরা বিচ্ছিন্ন গ্রামে পৌঁছাতে পারব।” ত্রাণ সহায়তার জন্য হেলিকপ্টার ও বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভূমিধস ও বন্যার প্রভাব মোকাবিলায় জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার দাবিও জোরালো হয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৪৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও শতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য তিনটি যুদ্ধজাহাজ ও দুটি হাসপাতাল জাহাজ পাঠানো হয়েছে। তবে অনেক এলাকার রাস্তা এখনও চলাচলের অনুপযোগী।

এদিকে, শ্রীলঙ্কায়ও সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন করেছে এবং বন্যা ও ভূমিধসের কারণে আটকা পড়া মানুষের জন্য সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে। রোববার পর্যন্ত এই দুর্যোগে ৩৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিসানায়েক বলেছেন, দেশটি বর্তমানে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি এবং তিনি শীঘ্রই পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

২০০৪ সালের এশিয়ান সুনামির পর এটি শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে মারাত্মক দুর্যোগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে শত শত মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং কর্তৃপক্ষ বৃহৎ ত্রাণ অভিযান পরিচালনা করছে। তবে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে রাজধানী কলম্বোর নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। অনেক বাসিন্দা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন, যেমন কলম্বোর ওয়েনাওয়াটে বাসিন্দা সেলভি, যিনি বন্যায় তার ঘর ডুবে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রয়েছেন।

এশিয়ার অধিকাংশ অঞ্চলে বর্তমানে বর্ষাকাল চলমান, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড়ের শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আরও ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যার সৃষ্টি করছে। দক্ষিণ থাইল্যান্ডে গত বন্যায় ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এক দশকের মধ্যে দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা বলে চিহ্নিত হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায়ও ভারী বৃষ্টির কারণে পার্লিস রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, এবং দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *