চাকরি ফেরতের দাবিতে বহিষ্কৃত সেনাসদস্যদের আন্দোলন: কতটা যুক্তিসংগত?

সম্প্রতি রাজধানীর বিজয়সরণীতে চাকরি ফেরতের দাবিতে একটি সংগঠিত কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল কিছু বহিষ্কৃত সেনাসদস্য, যদিও পরবর্তীতে তা প্রেসক্লাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ‘অবিচার’ ও ‘ন্যায়বিচারের দাবিতে’ এই কর্মসূচি প্রচার করা হলেও, বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া গোপন তথ্য বলছে—এটি আসলে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করতে সুপরিকল্পিত একটি ষড়যন্ত্রের অংশ।

জানা গেছে, এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন বাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া কয়েকজন সদস্য, যাদের অতীতে রয়েছে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ। যেমন, সৈনিক নাইমুল ইসলাম স্ত্রীকে হ’ত্যার হু’মকি ও একাধিক অভিযোগে বরখাস্ত হন ২০২১ সালে। মোস্তাফিজুর রহমান পরকীয়া ও অশ্লীল উপাদান সংরক্ষণের অভিযোগে ২০১৭ সালে চাকরি হারান। কর্পোরাল তাফসির আহমেদ ওষুধ চুরি ও স্বাক্ষর জালের অপরাধে চাকরিচ্যুত হন, আর সার্জেন্ট কামাল হোসেন দুর্নীতি ও সুদের ব্যবসার মাধ্যমে বাহিনীর নাম ব্যবহার করে আর্থিক অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।

গোপন বৈঠকে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—আন্দোলনে সহিংসতা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল, এমনকি আন্দোলনকারীরা নিজেদের আঘাত করা, আত্মহনন এবং পরিবারের সদস্যদের নামিয়ে দেওয়ার মতো বিপজ্জনক কৌশলও বিবেচনায় রেখেছেন। একজন সদস্য মন্তব্য করেছিলেন, “১৮ তারিখেই যা আদায় করার করতে হবে,” আরেকজন বলেন, “আমার তিন টন ট্রাক আছে, দেশীয় অ’স্ত্র নিতে চাইলে ব্যবহার করুন।”

বিশ্লেষকদের মতে, বাহিনীর আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়। তাই গুরুতর অপরাধের দায়ে বরখাস্ত হওয়া সদস্যদের এমন আন্দোলন আদৌ যুক্তিসংগত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাহিনী যখন পেশাদারিত্ব, সংস্কার ও আধুনিকীকরণে মনোযোগী, তখন বহিষ্কৃত কিছু সদস্যের নেতৃত্বে এমন আন্দোলন দেশের প্রতিরক্ষা কাঠামোর ওপর সরাসরি আঘাত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *