মব ভায়োলেন্স ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, “মব ভায়োলেন্সে কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী কখনো যুক্ত হয়নি, হবেও না—এটাই আমাদের অবস্থান।”
বুধবার (২১ মে) সকালে ঢাকার সেনানিবাসে আয়োজিত ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ শীর্ষক সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় সেনাপ্রধান সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন ও অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ঢাকার বাইরের ইউনিটের কর্মকর্তারাও ভার্চুয়ালি এ সভায় অংশ নেন।
সেনাপ্রধান বলেন, “দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে চাই এবং শিগগিরই গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “আসন্ন ঈদে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের পাশে থাকা, তাদের শান্তি নিশ্চিত করা।”
রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোর বিষয়ে তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার থেকেই আসতে হবে। এটি বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় আনতে হবে।”
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, “এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো পূর্ব আলোচনা হয়নি বা আমাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি। নির্যাতিতদের অধিকারের পক্ষে আমরা দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছি।”
সভার এক পর্যায়ে সেনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল ওয়াকার বলেন, “বরখাস্ত সেনাসদস্যদের অপরাধের তথ্য আইএসপিআরের মাধ্যমে প্রকাশ করা যেতে পারে, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।”
সংস্কার সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি বলেন, “কোনো সংস্কার হচ্ছে কি না, কীভাবে হচ্ছে, তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে রাজনৈতিক সরকারের পক্ষ থেকেই সিদ্ধান্ত আসা উচিত।”
সভায় সেনাপ্রধান পেশাগত শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীল আচরণের ওপর জোর দেন এবং নির্বাচনী দায়িত্বে সততা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।